বিশেষ প্রতিবেদক:
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করতেন মুসা মিয়া। করোনাকালীন এ দূর্যোগে প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাকে। তিন বছরের জমানো সঞ্চয়ের বেশিরভাগ ব্যয় হয়ে গেছে গত তিন মাসে। দ্রব্যমূল্য, যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং কর্মহীন এ সময়ে ঘর ভাড়া দিতে দিতে বর্তমানে নাজুক অবস্থা মুসার পরিবারের।
শুধু মুসার পরিবারই নয় কোভিড-১৯’র কারণে মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত অধিকাংশ মানুষের আয় কমে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। যাদের আয় কম তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বেশি। আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যাদের মুসা মিয়ার মতো আয়ের উৎসই বন্ধ হয়ে গেছে।
সূত্রানুযায়ী, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত তিনজন ব্যক্তির মধ্যে দু’জনই ছিলো নারায়ণগঞ্জের। এরপর থেকেই জেলায় ক্রমস বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ। একপর্যায়ে আইইডিসিআর থেকে নারায়ণগঞ্জকে রেডজোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তার কিছুদিন পরই সরকার থেকে সিদ্ধান্ত আসে পুরো জেলা লকডাউন করার। এরপর যা হবার তাই হয়েছে।
দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময়ধরে বন্ধ ছিলো নারায়ণগঞ্জের শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটসহ ব্যবসা-বাণিজ্য। মোদ্দাকথায় পুরো জেলা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো ওই সময়টাতে। যার ব্যপক প্রভাব পরেছে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত মানুষের উপর। সেসময় এমন অনেক মানুষের খোঁজ মিলেছে যারা দিনের পর দিন না খেয়ে পার করেছেন। যদিও সরকারের তরফ থেকে প্রত্যেকটি উপজেলায় ত্রাণ পৌছে দেয়া হয়েছিলো। তবে সবার ভাগ্যে তা জুটেনি।
চাকুরিজীবি মুসা মিয়ার মতো নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালেন ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক। তিনি জানান, গার্মেন্টেসে জুট কাপড়ের ব্যবসা করতাম। লকডাউনের সময় যা বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসার যে পুঁজি ছিলো বসে খেতে খেতে তাও শেষ হয়ে গেছে। তার উপর বেড়েছে যাতায়াত ভাড়া। আগে সাইনবোর্ড থেকে চাষাঢ়া যেতে ১৫ টাকা লাগতো এখন ৩০ টাকা লাগে। কাচাঁমাল থেকে শুরু করে সবরকম দ্রব্যমূল্যর দাম বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রতিনিয়তই সুরক্ষা সামগ্রী কিনতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে এখন প্রচুর ব্যয় কিন্তু আয় নেই।